শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ঢাকা-ওয়াশিংটন প্রতিরক্ষা সংলাপ, যেসব আলোচনা হলো

ঢাকা-ওয়াশিংটন প্রতিরক্ষা সংলাপ, যেসব আলোচনা হলো

স্বদেশ ডেস্ক:

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রতিরক্ষা সংলাপের প্রথম দিনে দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার দিকটি বিশেষ গুরুত্ব লাভ করেছে বলে জানা গেছে।

বুধবার ঢাকায় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ (এএফডি) কার্যালয়ে সকাল ১০টায় দুই দিনের দশম প্রতিরক্ষা সংলাপ শুরু হয়। এর আগে নবম প্রতিরক্ষা সংলাপ হয় ২০২২ সালের ১৬-২০ মে যুক্তরাষ্ট্রে। ২০১২ সাল থেকে দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সংলাপ হয়ে আসছে।

বুধবারের সংলাপে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, সামরিক বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা ও সফর বিনিময়, দুর্যোগ মোকাবিলা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা হয়।

সংলাপে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এএফডি অপারেশন ও পরিকল্পনা পরিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুসাইন মুহাম্মদ মাসীহুর রহমান। আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের কৌশলগত পরিকল্পনা ও নীতিবিষয়ক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল টমাস জে জেমস।

সংলাপে বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এবং কোস্টগার্ডসহ বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সংলাপ বৃহস্পতিবার শেষ হবে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, এই সংলাপের লক্ষ্য হলো- দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি করা। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সহযোগিতার ভিত্তি সুদৃঢ়। আমাদের এই সম্পর্ক বহুমাত্রিক, বহুমুখী এবং সর্বদা বিকশিত। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে প্রতিরক্ষা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ সহযোগিতা প্রদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমাগত সহায়তার বিষয়টি সুস্পষ্ট।

প্রতিবছর বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর অনেক সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে থাকেন। দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন এবং সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে একসঙ্গে কাজ করে আসছে। দুই দেশের মধ্যে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সফর বিনিময় সামরিক সহযোগিতার একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য।

এবারের সংলাপে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা ও সামরিক সহযোগিতা, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, দুর্যোগ মোকাবিলা, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ, পরিদর্শন, যৌথ অনুশীলন ও মোতায়েন, কর্মশালা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

সংলাপ শুরুর আগে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে অংশগ্রহণকারী যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের প্রধান সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

সংলাপে প্রস্তাবিত ‘জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট’ (জিসোমিয়া) ও ‘দ্য অ্যাকুইজেশন অ্যান্ড ক্রস-সার্ভিসিং এগ্রিমেন্ট’ (আকসা) এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে সমরাস্ত্র ক্রয়সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এবারের প্রতিরক্ষা সংলাপের গুরুত্বের বিষয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার বলেন, অবাধ, মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব অভিন্ন।

উল্লে­খ্য, ফোর্সেস গোল-২০৩০ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার সামরিক বাহিনীকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে চায়। একই সঙ্গে নিজেদের সক্ষমতা, যুগোপযোগী হওয়া ও ভূরাজনৈতিক কৌশলগত বিবেচনায় একক দেশের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ অপরাপর দেশগুলোর কাছ থেকে সমরাস্ত্র ক্রয়ের কথা ভাবছে বাংলাদেশ। গত বছরের মে মাসে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত নবম প্রতিরক্ষা সংলাপে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত দুই প্রতিরক্ষা চুক্তির ব্যাপারে ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করেছে সরকার। সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877